Home > Work > সাতটি তারার তিমির
1 " আমরা যাই নি মরে আজও--তবু কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয়:মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জোছনার প্রান্তরে,প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন--এখনও ঘাসের লোভে চরেপৃথিবীর কিমাবার ডাইনামোর 'পরে। "
― Jibanananda Das , সাতটি তারার তিমির
2 " পৃথিবী প্রবীণ আরো হ'য়ে যায় মিরুজিন নদীটির তীরে;বিবর্ণ প্রাসাদ তার ছায়া ফেলে জলে।ও-প্রাসাদে কারা থাকে? কেউ নেই- সোনালি আগুন চুপে জলের শরীরেনড়িতেছে- জ্বলিতেছে- মায়াবীর মতো জাদুবলে।সে-আগুন জ্ব'লে যায়- দহেনাকো কিছু। সে-আগুন জ্ব'লে যায় সে-আগুন জ্ব'লে যায়সে-আগুন জ্ব'লে যায় দহেনাকো কিছু।নিমীল আগুনে অই আমার হৃদয় মৃত এক সারসের মতো। পৃথিবীর রাজহাঁস নয়- নিবিড় নক্ষত্র থেকে যেন সমাগতসন্ধ্যার নদীর জলে এক ভিড় হাঁস অই- একা;এখানে পেল না কিছু; করুণ পাখায়তাই তারা ব'লে যায় শাদা, নিঃসহায়।মূল সারসের সাথে হ'লো মুখ দেখা। "
3 " আমরা এ-পৃথিবীর বহুদিনকারকথা কাজ ব্যথা ভুল সংকল্প চিন্তারমর্যাদায় গড় কাহিনীর মূল্য নিংড়ে এখনসঞ্চয় করেছি বাক্য শব্দ ভাষা অনুপম বাচনের রীতি ।মানুষের ভাষা তবু অনুভূতিদেশ থেকে আলোনা পেলে নিছক ক্রিয়া; বিশেষণ; এলোমেলো নিরাশ্রয় শব্দের কঙ্কাল;জ্ঞানের নিকট থেকে ঢের দূরে থাকে ।অনেক বিদ্যার দান উত্তরাধিকারে পেয়ে তবুআমাদের এই শতকেরবিজ্ঞান তো সংকলিত জিনিসের ভিড় শুধু— বেড়ে যায় শুধু;তবুও কোথাও তার প্রাণ নেই ব’লে অর্থময়জ্ঞান নেই আজ এই পৃথিবীতে; জ্ঞানের বিহনে প্রেম নেই ।এ-যুগে কোথাও কোনো আলো— কোনো কান্তিময় আলোচোখের সুমুখে নেই যাত্রিকের; নেই তো নিঃসৃত অন্ধকাররাত্রির মায়ের মতো: মানুষের বিহ্বল দেহেরসব দোষ প্রক্ষালিত ক’রে দেয়— মানুষের বিহ্বল আত্মাকেলোকসমাগমহীন একান্তের অন্ধকারে অন্তঃশীল ক’রেতাকে আর সুধায় না— অতীতের সুধানো প্রশ্নেরউত্তর চায় না আর— শুধু শব্দহীন মৃত্যুহীনঅন্ধকারে ঘিরে রাখে, সব অপরাধ ক্লান্তি ভয় ভুল পাপবীতকাম হয় যাতে— এ-জীবন ধীরে-ধীরে বীতশোক হয় "