Home > Work > হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম (হিমু, #6)
1 " সঙ্গে সঙ্গে আমার মনে হলো, আসাদুল্লাহ সাহেবের নীলপদ্ম থিউরি ঠিক আছে. এই তরুণী তার সমস্ত নীলপদ্ম হিমু নামের এক ছেলের হাতে তুলে দিয়ে তীব্র কষ্ট ও যন্ত্রণার ভেতর বাস করছে। এই যন্ত্রণা, এই কষ্ট থেকে তার মুক্তি নেই. "
― Humayun Ahmed , হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম (হিমু, #6)
2 " আমার সঙ্গে কি আছে জানিস? পদ্ম। নীলপদ্ম। পাচটা নীলপদ্ম নিয়ে ঘুরছি। কি অপূর্ব পদ্ম। কাউকে দিতে পারছিনা। দেয়া সম্বব নয়. হিমুরা কাউকে নীলপদ্ম দিতে পারে না. "
3 " তুমি আমাকে যে চিটি লিখেছিলে আমি তার জবাব লিখে এনেছি। সাংকেতিক ভাষায় লিখে এনেছি।'মারিয়া হাত বাড়াল। তার চোখে চাওয়া কৌতুক ঝকমক করছে। মনে হচ্ছে যে কোনো মুহুর্তে হে খিলখিল করে হেসে ফেলবে. যেন সে অনেক কষ্টে হাসি থামাচ্ছে। 'সাংকেতিক চিঠিটাই কি লেখা পড়তে পারছ?''পারছি। এখানে লেখা I hate you.''I Love you - ও তো হতে পারে।''সংকেতের ব্যাখ্যা সবাই তার নিজের মত করে করে, আমিও তাই করলাম। আপনার আটটা তারার অনেক মানে করা যাই, যেমন - I want you.I miss you.I lost you.আমি আমার পছন্দ মত একটা বেছে নিলাম। "
4 " হিমু ভাই!''বল''যাবার আগে আপনি কি বলে যাবেন আপনি কে?'আমি বললাম, 'মারিয়া, আমি কেউ না. I am nobody.'আমি আমার এক জীবনে অনেককে এই কথা বলেছি - কখনো আমার গলা ধরে যায়নি, বা চোখ ভিজে অঠেনি। দুটা ব্যাপারী এই প্রথম ঘটল. "
5 " কয়েক মুহুর্তের জন্যে আমার ভেতর এক ধরনের বেভ্রম তৈরী হল. মনে হল আমার আর হাটার প্রয়োজন নেই. মহাপুরুষ না, সাধারণ মানুষ হয়ে মমতাময়ী এই তরুনিতির পাশে এসে বসি. যে নীলপদ্ম হাতে নিয়ে জীবন শুরু করেছিলাম, সেই প্দ্ম্গুলি তার হাতে তুলে দেই. তারপরেই মনে হলো - এ আমি কি করতে যাচ্ছি! আমি হিমু - হিমালয়। "
6 " বাংলাদেশের আদর্শ নাগরিক কী করবে? ভারতীয় কাপড় পরবে। ভারতীয় বই পড়বে, ভারতীয় ছবি দেখবে, ভারতীয় গান শুনবে। ছেলেমেয়েদের পড়াতে পাঠাবে ভারতীয় স্কুল-কলেজে। চিকিৎসার জন্য যাবে বোম্বাই, ভ্যালোর- এবং ভারতীয় গরু খেতে খেতে চোখমুখ কুঁচকে বলবে- শালার ইন্ডিয়া! দেশটাকে শেষ করে দিল! দেশটাকে ভারতের খপ্পর থেকে বাঁচাতে হবে। "
7 " মানুষ সহজে প্রতারিত হয় এরকম কথাগুলির একটি হচ্ছে - "আপনি বড়ই অভিমানী, নিজের কষ্ট প্রকাশ করেন না, লুকিয়ে রাখেন। "
8 " মানুষ ভান করিতে জানে, পশু জানে না - এই একটি বিষয় ছাড়া মানুষের সঙ্গে পশুর কোনো তফাত নেই। "