ইথাকার পথে তুমি যখন মাস্তুল দিলে তুলে প্রার্থনা কর যেন যাত্রা হয় প্রলম্বিত, পরিপূর্ণ রোমাঞ্চ ও অভিজ্ঞতা দ্বারা। লিস্ট্রাইগ্যনি, সাইক্লপ, ক্রুদ্ধ পসাইডন কাউকে করো না ভয় যতক্ষণ তোমার হৃদয় রয়েছে উন্নত, যতক্ষণ তোমার দেহ ও আত্মা সৃষ্টি করে দুর্লভ আবেগ। লিস্ট্রাইগ্যণি, সাইক্লপ, রুষ্ট পসাইডন এদের কারোই দেখা পাবে না, যদি না নিজেই তুমি এদের বহন কর অন্তর্গত প্রাণে, যদি না তোমার মন এদের সারাটা ক্ষণ ধরে রাখে সমুখে তোমার।
প্রার্থনা কর যেন যাত্রা হয় দীর্ঘায়িত, অনেক গ্রীষ্ম আর বসন্ত প্রভাতে কি আনন্দে ফুল্লচিত্তে না-দেখা বন্দরে ফেলা প্রথম নোঙ্গর জাহাজ ভেড়ানো ব্যস্ত ফিনিসিয় বাণিজ্য নগরে সওদা করেছ তুমি দ্রব্যাদি উত্তম– প্রবাল, স্ফটিক, মুক্তা, আবলুস কাঠ, রকমারি ইন্দ্রজাগানীয়া ঘ্রাণ, মেশক-এ-অম্বর; মিশরীয় অনেক শহরে ভ্রমণে; গুণীজন সংস্পর্শে, জ্ঞান সঞ্চয়নে ইথাকাকে পুষে রাখো মনের কোঠায়। শেষযাত্রা সেখানেই বিধির বিধান কিন্তু ভুলেও যাত্রা করো না ত্বরিৎ।
বরং এটাই ভালো, হাজার বছর যাক সমুদ্র ভ্রমণে কারণ যখন তুমি ফিরবে স্বদেশ তটে বৃদ্ধ হয়ে গেছ তুমি বটে। পথের সঞ্চয়ে তুমি হয়েছো ধনেশ ইথাকার সম্পদের ভগ্ন অবশেষ না-ই বা করলে আশা আর। তোমার গৌরবযাত্রা–সে তো ইথাকারই দান তার উদ্দেশ্যেই ছিল দুর্জয় এ অভিযান এখন ফেরার পর তোমাকে দেবার বাকী আর নাই কিছু তার তবু যদি জননীকে মনে হয় বড় আকিঞ্চনা জেনে রেখো সে কখনো করেনি বঞ্চনা। অভিজ্ঞতাপ্লুত হয়ে এতটাই হয়েছ সজ্ঞান যে ইতিমধ্যে এইসব ইথাকার মানে তোমার হৃদয়ই সেটা জানে। "