Home > Author > Jules Lafourge >

" তিনটি ভেঁপুর রহস্য
সমতলভূমিতে এক ভেঁপু
শ্বাস না ফুরোনো অব্দি বাজানো
আরেকটা, জঙ্গলের হৃদয় থেকে,
জবাব দেয় ;
একটা নিজের গানের মন্ত্র
পাশের বনানীকে শোনায়,
অন্যটা জবাবি গান শোনায়
প্রতিধ্বনির পাহাড়গুলোকে ।
যে ভেঁপু সমতলভূমিতে
নিজের কপালের শিরাকে অনুভব করলো
ফুলে রয়েছে ;
বনানীতে অন্যজন
নিজের ক্ষমতাকে সঞ্চয় করে রাখলো
পরে কোনো সময়ের জন্য ।
---কোথায় লুকিয়ে আছো,
আমার সুন্দর ভেঁপু ?
তুমি সত্যিই বজ্জাত !
---আমি আমার প্রেমিকাকে খুঁজছি,
নীচে ওইখানে, আমাকে ডাকছে
সূর্যাস্ত দেখার জন্য ।
---আমি তোমায় শুনতে পাচ্ছি ! আমি তোমায় ভালোবাসি !
হে রঁসেভু পর্বতমালা !
---প্রেমে পড়া, হ্যাঁ, বেশ মিষ্টি ব্যাপার ;
কিন্তু দ্যাখো : সূর্য তো নিজেকে মেরে ফেলছে, ঠিক তোমার সামনে !
সূর্য ওর যাজকীয় উত্তরীয় নামিয়ে রাখছে,
চুল খুলে ফেলেছে,
আর হাজার নদী
জ্বলন্ত সোনা
আকাশের তলা দিয়ে বইছে,
জাগিয়ে তুলছে জানলাগুলোকে
শৈল্পিক মদ-বিক্রেতাদের
একশো বোতল বিদেশি গন্ধকবিষে!...
আর পুকুরটা, রক্তরঙা, হঠাৎ খুলে গেছে, ছড়িয়ে দিয়েছে,
আর সূর্যের রথের ঘোটকিগুলো তাতে ডুবছে,
পেছনের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াচ্ছে, জলে খেলছে, শেষে স্হির হয়েছে
কারখানাগুলোর ছাই আর সুরাসারের কাদায় !...
দিগন্তের কঠিন বালিয়াড়ি আর কাঠের স্ফূলিঙ্গ
দ্রুত শুষে ফেলছে বিষের প্রদর্শনী ।
হ্যাঁ ঠিক তাই,
ওনাদের শৌর্যের গান গান গান !...
হঠাৎ আতঙ্কিত ভেঁপুগুলো
নাকে নাক ঠেকানো অবস্হায় নিজেদের আবিষ্কার করে ;
ওরা তিনজন !
বাতাস বইতে থাকে, হঠাৎই ঠাণ্ডা লাগে ।
তুমি কি গান শুনতে পাচ্ছো, ওনাদের শৌর্যের গান !
হাতে হাত জড়িয়ে সবাই চলে যাচ্ছে
তাদের বাড়িতে ফিরছে,
---”আমরা কি কোথাও বিশ্রাম নিতে পারি না
একটি গলা ভেজাবার জন্য ?”
বেচারা ভেঁপু ! বেচারা ভেঁপু !
কতো তিক্ত হয়ে উঠলো ওদের হাসি ।
( আমি এখনও শুনতে পাচ্ছি )।
পরের দিন, গ্রঁ-স-য়ুবার-এর বাড়িউলি
ওদের খুঁজে পেলেন, তিনজনকেই, মৃত ।
তাই কয়েকজন গিয়ে কর্তৃপক্ষকে নিয়ে এলো
যাঁরা সেই অঞ্চলের
যাঁরা এদের ইতিহাস খুঁজতে লাগলেন
এই অনৈতিক রহস্য জানার জন্য । "

Jules Lafourge


Image for Quotes

Jules Lafourge quote : তিনটি ভেঁপুর রহস্য<br />সমতলভূমিতে এক ভেঁপু<br />শ্বাস না ফুরোনো অব্দি বাজানো<br />আরেকটা, জঙ্গলের হৃদয় থেকে,<br />জবাব দেয় ;<br />একটা নিজের গানের মন্ত্র<br />পাশের বনানীকে শোনায়,<br />অন্যটা জবাবি গান শোনায়<br />প্রতিধ্বনির পাহাড়গুলোকে ।<br />যে ভেঁপু সমতলভূমিতে<br />নিজের কপালের শিরাকে অনুভব করলো<br />ফুলে রয়েছে ;<br />বনানীতে অন্যজন<br />নিজের ক্ষমতাকে সঞ্চয় করে রাখলো<br />পরে কোনো সময়ের জন্য ।<br />---কোথায় লুকিয়ে আছো,<br />আমার সুন্দর ভেঁপু ?<br />তুমি সত্যিই বজ্জাত !<br />---আমি আমার প্রেমিকাকে খুঁজছি,<br />নীচে ওইখানে, আমাকে ডাকছে<br />সূর্যাস্ত দেখার জন্য ।<br />---আমি তোমায় শুনতে পাচ্ছি ! আমি তোমায় ভালোবাসি !<br />হে রঁসেভু পর্বতমালা !<br />---প্রেমে পড়া, হ্যাঁ, বেশ মিষ্টি ব্যাপার ;<br />কিন্তু দ্যাখো : সূর্য তো নিজেকে মেরে ফেলছে, ঠিক তোমার সামনে !<br />সূর্য ওর যাজকীয় উত্তরীয় নামিয়ে রাখছে,<br />চুল খুলে ফেলেছে,<br />আর হাজার নদী<br />জ্বলন্ত সোনা<br />আকাশের তলা দিয়ে বইছে,<br />জাগিয়ে তুলছে জানলাগুলোকে<br />শৈল্পিক মদ-বিক্রেতাদের<br />একশো বোতল বিদেশি গন্ধকবিষে!...<br />আর পুকুরটা, রক্তরঙা, হঠাৎ খুলে গেছে, ছড়িয়ে দিয়েছে,<br />আর সূর্যের রথের ঘোটকিগুলো তাতে ডুবছে,<br />পেছনের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াচ্ছে, জলে খেলছে, শেষে স্হির হয়েছে<br />কারখানাগুলোর ছাই আর সুরাসারের কাদায় !...<br />দিগন্তের কঠিন বালিয়াড়ি আর কাঠের স্ফূলিঙ্গ<br />দ্রুত শুষে ফেলছে বিষের প্রদর্শনী ।<br />হ্যাঁ ঠিক তাই,<br />ওনাদের শৌর্যের গান গান গান !...<br />হঠাৎ আতঙ্কিত ভেঁপুগুলো<br />নাকে নাক ঠেকানো অবস্হায় নিজেদের আবিষ্কার করে ;<br />ওরা তিনজন !<br />বাতাস বইতে থাকে, হঠাৎই ঠাণ্ডা লাগে ।<br />তুমি কি গান শুনতে পাচ্ছো, ওনাদের শৌর্যের গান !<br />হাতে হাত জড়িয়ে সবাই চলে যাচ্ছে<br />তাদের বাড়িতে ফিরছে,<br />---”আমরা কি কোথাও বিশ্রাম নিতে পারি না<br />একটি গলা ভেজাবার জন্য ?”<br />বেচারা ভেঁপু ! বেচারা ভেঁপু !<br />কতো তিক্ত হয়ে উঠলো ওদের হাসি ।<br />( আমি এখনও শুনতে পাচ্ছি )।<br />পরের দিন, গ্রঁ-স-য়ুবার-এর বাড়িউলি<br />ওদের খুঁজে পেলেন, তিনজনকেই, মৃত ।<br />তাই কয়েকজন গিয়ে কর্তৃপক্ষকে নিয়ে এলো<br />যাঁরা সেই অঞ্চলের<br />যাঁরা এদের ইতিহাস খুঁজতে লাগলেন<br />এই অনৈতিক রহস্য জানার জন্য ।